রাজ্যে প্রায় দু’লক্ষের কাছাকাছি শিক্ষক সহ অন্যান্য সরকারি দপ্তরে কর্মী নিয়োগ হতে চলেছে। রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতি মামলা সহ একাধিক কারণে দীর্ঘদিন যাবত নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারেনি। তার মাঝে দেশের সর্বোচ্চ সুপ্রিম কোর্টে ওবিসি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। তাই সরকার চাইলেও নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করতে পারছেন না। আসন্ন ২০২৬ বিধানসভা ভোট, এই ভোটের আগে নিজের ভাবমূর্তি স্বচ্ছ করতে রাজ্য সরকার বেশ কিছু নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন করতে চাইছে।
তবে ওবিসি মামলা কারণে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারছেন না।এই নিয়ে বিধানসভায় মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে বিরোধী দলগুলোর তরফ থেকে প্রশ্ন করা হলে তিনি তার জবাবে বলেন বর্তমানে যেহেতু ওবিসি মামলা বিচারাধীন রয়েছে, তাই আমরা চাইলেও নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারছি না। আমরা চাই খুব দ্রুত ওবিসি মামলা নিষ্পত্তি করে একাধিক নিয়োগ প্রক্রিয়াগুলি সম্পন্ন করতে। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন বর্তমানে রাজ্যের বিরোধী দলগুলি চাইছে রাজ্য সরকার যাতে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে না পারে তাই ইচ্ছাকৃতভাবে একাধিক মামলার কোর্টে ঝুলিয়ে রেখেছে।
তবে আমরাও দম্বার পাত্র নই খুব দ্রুত মামলা গুলি নিষ্পত্তি করে প্রায় 2 লক্ষ এর অধিক সরকারি কর্মচারী নিয়োগ করতে চলেছি। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে একাধিক সরকারি দপ্তরে প্রায় দু লক্ষের অধিক শূন্য পদ ফাঁকা রয়েছে। খুব দ্রুত এই পদগুলি পূরণ করা হবে। এই পদ গুলির মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে শিক্ষক-শিক্ষিকা হিসেবে ১ লক্ষ চাকরিপ্রার্থীকে নিয়োগ করতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার।

এর পাশাপাশি স্বাস্থ্য, পুলিশ, উচ্চমাধ্যমিক এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয় গুলি মিলিয়ে প্রায় ২ থেকে ৩ লক্ষ শূন্যপদ রয়েছে। খুব দ্রুত রাজ্য সরকার কোর্টে বিচারাধীন সমস্ত মামলা নিষ্পত্তি করে যত দ্রুত সম্ভব নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে চলে। বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে ওবিসি সংক্রান্ত মামলাটি জারি রয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের পরে রাজ্য সরকার সঠিক বিচারের আশায় দারস্ত হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের কাছে।
বিগত শুনানিতে কোর্টের পক্ষ থেকে পুনরায় নতুন করে সমীক্ষার জন্য রাজ্য সরকারকে পরবর্তী তিন মাস সময় দেওয়া হয়েছে। এই তিন মাস রাজ্য সরকার পুনরায় সমীক্ষা করে বৈধ অবৈধ ওবিসি সার্টিফিকেটগুলি সঠিক যাচাই করতে পারলেই কোর্টের তরফ থেকে বৈধ ওবিসি সার্টিফিকেট গুলোকে মানবতা দেওয়া হবে। তারপর দ্রুত ওবিসি মামলা নিষ্পত্তির পর রাজ্য সরকার নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ন করতে আর কোন বাধা থাকবে না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দু লক্ষের অধিক চাকরির ঘোষণার পর থেকে একাধিক মহলে জল্পনার সৃষ্টি হয়েছে।
অনেকের মতে বিগত বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্য সরকার ডবল ডবল চাকরির যে প্রতিশ্রুতিতে দিয়েছিল তা সম্পন্ন করতে পারেনি রাজ্য সরকার। সামনে ২০২৬ বিধানসভা ভোট এই ভোটকে পার করার জন্যই রাজ্য সরকার পুনরায় রাজ্যের বেকার যুবক যুবতীদের প্রলোভন দেয়ার চেষ্টা করছে। ইতিমধ্যে শিক্ষক দুর্নীতি মামলায় দুর্নীতির অভিযোগে সরকারের ভাবমূর্তি খারাপ হয়েছে।
রাজ্যে ক্রমে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বেড়ে চলেছে অথচ রাজ্য সরকার শিক্ষক সহ একাধিক ক্ষেত্রে নিয়োগ করছেন না। এই নিয়ে চাকরি প্রার্থীরা একাধিকবার আন্দোলনের শামিল হয়েছে। তবে বর্তমানে যেহেতু খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দু’লক্ষ কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তাই আশা করা যায় আগামীতে শিক্ষক সহ অন্যান্য সরকারি দপ্তরে নতুন নিয়োগের পথে হাঁটতে চলেছে রাজ্য সরকার। এই সংক্রান্ত পরবর্তী আপডেট প্রকাশিত হলে আপনাদের জানানো হবে।